ভারতের নির্বাচন কমিশনের পরিসংখ্যানে দেশটির সবচেয়ে দরিদ্র মুখ্যমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলা যায়, তিনি আগের মতোই রয়ে গেছেন।
২০১৮ সালে অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মসের (এডিআর) প্রতিবেদনে ভারতের দরিদ্রতম মুখ্যমন্ত্রীর তকমা পেয়েছিলেন মমতা।
এবারও নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে, মমতার আর্থিক অবস্থা এখনও তলানিতে।
ভারতের যে কোনো নির্বাচনের আগে প্রার্থীদের সম্পত্তির হিসাব নির্বাচন কমিশনকে বাধ্যতামূলক জানাতে হয়। নির্বাচন কমিশনের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, ১৭ লাখ রুপির সম্পত্তি আছে মমতার।
সবচেয়ে ধনী মুখ্যমন্ত্রী হলেন অন্ধ্র প্রদেশের জগনমোহন রেড্ডি, যার সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ৫১০ কোটি রুপি।
একই সময়ের মধ্যে ভারতের অনেক মুখ্যমন্ত্রীর সম্পত্তির পরিমাণ বেড়েছে। অরুণাচল, আসাম, মরাস্ত্র, গোয়া, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর সম্পত্তি কোটির অঙ্ক ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথের সম্পত্তির মূল্য প্রায় দেড় কোটি রুপি, দিল্লির অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সাড়ে তিন কোটি, কেরালার পিনারাই বিজয়নের প্রায় ১.২০ কোটি রুপি। সম্প্রতি নির্বাচনে জয়লাভ করা গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেলের সম্পত্তির মূল্য ৮.২২ কোটি রুপি।
কালীঘাটের টালির বাড়ি বলে খ্যাত মুখ্যমন্ত্রী মমতার বসতবাড়ি। কংগ্রেস জামানায় ডানপন্থি রাজনীতিতে ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে হাতেখড়ি তাঁর। বয়স ৪০ পেরোনোর আগেই যুবনেত্রী হিসেবে তুমুল জনপ্রিয়তা তাঁকে সংসদীয় রাজনীতিতে প্রবেশের সুযোগ এনে দেয়। এর পর ৯০ দশকের শেষে নিজের দল তৃণমূল কংগ্রেসের গঠন এবং ২০১১ সাল পর্যন্ত টানা আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতায় আসার গল্প এক ইতিহাস।
মমতার দলীয় প্রতীক ঘাসফুলের পাশাপাশি তার পরনের তাঁতের শাড়ি, পায়ের হাওয়াই চটিও তাঁর 'প্রতীক' হয়ে গেছে এখন। মমতার এমন বর্ণময় রাজনীতিতে তৃণমূল কংগ্রেসের আমলেই উঠে এসেছে একের পর এক দুর্নীতি ইস্যু।
কয়লা পাচার, গরু পাচার, শিক্ষক দুর্নীতি, নারদা কেলেঙ্কারি, সারদা-রোজভ্যালি চিটফান্ড বিরোধীদের ত্রিশূলের ফলা বারবার ধেয়ে এসেছে শাসক দলের দিকে। মমতার ইমেজে বারবার দাগ বসাতে চেয়েছে; কিন্তু পারেনি। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশনের তথ্য তৃণমূল কংগ্রেসকে বেশ অপিজেন দেবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।